চলতি সপ্তাহের শেষে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা একটি লঘুচাপ ঘনীভূত হয়ে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হলে সৌদি আরবের দেওয়া নামানুসারে এর নাম হবে ফেনজাল। তবে তারা বলছেন, লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলেও তা বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা কতটুকু তা এখনও স্পষ্ট নয়।
দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থান করছে। যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। অবশ্য ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ তার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছিলেন, ২৪ থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে এই ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে পারে।
এই ঘূর্ণিঝড় সরাসরি পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্য ও শ্রীলঙ্কার ওপর আঘাত করার আশঙ্কা রয়েছে। এর সম্ভাব্য প্রভাবে বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ২৯ নভেম্বর (শুক্রবার) দুপুরের তামিলনাড়ুর চেন্নাই থেকে ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে ঘূ্র্ণিঝড় ফেনজাল। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে তা আছড়ে পড়তে পারে। আগামী দু'দিনে তামিলনাড়ুর উপকূল হয়ে ফেনজাল উত্তর-পশ্চিমে শ্রীলঙ্কার উপকূলের দিকে এগিয়ে যাবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তামিলনাড়ু, পুদুচেরিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টি ছাড়াও সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৬৫ কিমি বেগে হাওয়া বইবে পূর্ব ভারতের উপকূলগুলিতে।
গভীর নিম্নচাপের জেরে মঙ্গলবার থেকেই তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে তামিলনাড়ুতে। শুক্রবার ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে চেন্নাই, চেঙ্গালপেট, কাঞ্চিপূরম ও তিরভাল্লুরে। আর শুক্রবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে চেন্নাই, ময়িলাদুথুরাই, তিরুভারুর, নাগাপট্টিনম, তিরুভাল্লুর, কাঞ্চিপুরম, চেঙ্গলপেট এবং কাড্ডালোর জেলায়। এই আট জেলায় শুক্রবার থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফেনজালের -এর দাপটে তামিলনাড়ুতে প্রবল দুর্যোগের আশঙ্কায় এরইমধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। দুর্যোগ মোকাবিলায় মোতায়েন রাজ্য ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একাধিক দল। রাজ্যজুড়ে তৈরি রয়েছে ১৬০০-র বেশি ত্রাণকেন্দ্র।
ঠিকানা/এসআর