জরুরি সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে সরকার। তবে সেটি সব রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
২৮ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এর আগে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনের সম্পর্ক আছে জানিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সংস্কার কমিশন থেকে প্রস্তাব আসবে, জনগণ কথা বলবে। চূড়ান্ত সংস্কার প্রস্তাবনা হবে। সেই মোতাবেক যে পদক্ষেপ নেওয়ার তা নেব। আমরা বারবার বলেছি যত দ্রুত সম্ভব জরুরি সংস্কারগুলো শেষে নির্বাচনের তারিখ জানিয়ে দেব।
তিনি বলেন, নির্বাচনে আমাদের যেতেই হবে। এটা আমাদের কাজ। একই সঙ্গে তাদের (রাজনৈতিক দল) সংস্কারের বিষয়ে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে। তারা কখনও কখনও বলছে- একটা সময় দিয়ে দেওয়ার জন্য। সেই সময়টার ব্যাপারে আমরা অবস্থান নিতে পারছি না। কারণ সংস্কার প্রস্তাব কী আসবে, সংস্কারে কতটুকু সময় লাগবে, এটা না জেনে তো নির্বাচনের সময়টা বলে দেওয়া যাচ্ছে না। বারবার বলা হচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব দিয়ে দেওয়া হবে।
দায়িত্ব নিলে সরকারকে নানামুখী চাপের মধ্যে কাজ করতে হয় বলে জানিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নভেম্বর না করে জানুয়ারিতে করলেও একই প্রশ্নের সম্মুখীন (রাজনৈতিক দলের চাপ) হতাম। নির্বাচন কমিশন চাপে নয়, নিয়মতান্ত্রিকভাবেই করা হয়েছে। দাবিটা নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নয়, নির্বাচনের তারিখ ও রোডম্যাপ নিয়ে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন, স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক অধিকার, নারীবিষয়ক এবং স্থানীয় সরকার সংস্কারে কমিশন গঠন করা হয়েছে।
কমিশন গঠনের ৯০ দিনের মধ্যে কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। ডিসেম্বর বা জানুয়ারির প্রথম দিকে অধিকাংশ কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের কথাও বলা হচ্ছে।
নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, নির্বাচনের বিষয়টি সরকারের নজরে আছে বলেই নির্বাচনি উদ্যোগ আছে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। অন্যান্য কার্যক্রমও চলমান আছে।
মাহফুজ আলম বলেন, সরকারের দিক থেকে দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে- সংস্কার। বাংলাদেশের জনগণ যে জন্য জীবন দিয়েছে, এই সংস্কারের একটি দৃশ্যমান প্রক্রিয়া হওয়ার পরই নির্বাচন হবে। সংস্কার কার্যক্রম চলমান আছে। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনগুলো আসুক।
ঠিকানা/এসআর