মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক। ট্রাম্প এরই মধ্যে ঘোষণা করেছেন, আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদেশ সফরসূচির শুরুতেই তিনি ভারতের স্থান রেখেছেন। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ব্যক্তিগত চমৎকার সম্পর্কের কারণেই সর্বপ্রথম ভারত সফরের কথা বলেছেন। ব্যক্তিগত মাধুর্যময় সম্পর্ক ছাড়াও চীনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভারতকে প্রতিষ্ঠিত করতে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন আধিপত্য ও একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ভারতের ভূমিকা জরুরি। এ ব্যাপারে ভারতের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করে যুক্তরাষ্ট্র।
ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও কৌশলগত কারণে মহাশক্তিধর যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর কাছে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কর্তৃত্ববাদী ভারত তার ভৌগোলিক, সামরিক, বাণিজ্যিক স্বার্থেই বাংলাদেশকে সর্বাধিক কাছে রাখতে চায়। ভৌগোলিক, সামরিক স্বার্থে বাংলাদেশ প্রশ্নে তাদের প্রায় অভিন্ন অবস্থান। শেখ হাসিনার শাসনামলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক-অর্থনৈতিক, সামরিক-কৌশলগত বিভিন্ন বিষয়ে যেসব চুক্তি হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও তার সুবিধাভোগী। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের স্থলে চীনের কর্তৃত্ব, নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার প্রবল বিরোধী। দক্ষিণ এশিয়া ছাড়াও চীন ও তার মিত্রদের কাছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-বাণিজ্যিক, সামরিক-কৌশলগত সম্পর্কের গভীরতা বুঝিয়ে দেওয়ার অন্যতম উদ্দেশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশ সফরের প্রথমেই ভারতকে বেছে নিয়েছেন।
এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর, জাপান সাগর, চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র চীনের আধিপত্য বাধাগ্রস্ত করে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সুদূরপ্রসারী সামরিক, ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ নিশ্চিত করতে ভারতের মিত্রতার বিকল্প নেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। ভারতের সমস্যা, তাদের স্বার্থ সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা ও তা ভারতের অনুকূলে তার নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের অপসারণ, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা এবং জামায়াতে ইসলামীর উত্থানকে ভারত বড় ধরনের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।