অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া জানিয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে তিনি চান সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে খেলেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান। দেশে খেলতে এলে সাকিবকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাসও আরও একবার দিয়েছেন তিনি।
ভারতে সিরিজ চলাকালে গত ২৬ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট ও টি–টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন সাকিব। সঙ্গে জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুরে খেলেই বিদায় নিতে চান লাল বলের ক্রিকেট থেকে।
মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলার ইচ্ছার কথা জানিয়ে সাকিব কানপুরে এও বলেছিলেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়।’ সেই থেকে সাকিবের শেষ টেস্ট নিয়ে জল্পনা–কল্পনা কম হচ্ছে না। অনেকে তো ধরেই নিয়েছেন, ভারতের বিপক্ষে কানপুরেই তিনি শেষ টেস্ট খেলে ফেলেছেন।
সেটার অবশ্য কারণও ছিল। দেশে ফিরতে এবং পুনরায় দেশ ছাড়তে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু দেশে ফেরার পর সাকিবের নিরাপত্তা এবং ঠিকঠাক দেশের বাইরে যেতে পারা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কেউই ইতিবাচক কোনো কথা বলেননি। টাইগার এই অলরাউন্ডারের নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) বল ঠেলে দিয়েছে সরকারের কোর্টে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে বৃহস্পতিবার ক্রীড়া উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘তিনি (সাকিব) এমন একজন খেলোয়াড়, যার দেশের জন্য অনেক অবদান রয়েছে। তিনি যেহেতু বাংলাদেশে নিজের শেষ টেস্ট খেলতে চান, আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই সেই সুযোগ তিনি পান।’
দেশে এলে সাকিবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপদেষ্টা আরেকবার বলেছেন, ‘আমাদের একজন খেলোয়াড়কে অবশ্যই আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেব। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, সেটা ভিন্ন বিষয়। সেই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারি না, কারণ সেটা আইন মন্ত্রণালয়ের বিষয়। আমরা সাকিব আল হাসানের নিরাপত্তার কথা এরইমধ্যে বলেছি, সেটা আমরা নিশ্চিত করব।’
দেশে সাকিবের শেষ টেস্ট খেলা নিয়ে এত কথা হতে থাকলেও কানপুরের ওই সংবাদ সম্মেলনের পর সাকিব এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত একেবারেই নিশ্চুপ। ভারতে টেস্ট সিরিজ শেষে তিনি চলে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু শেষ টেস্ট খেলা নিয়ে তাঁর মুখ থেকে আর কিছু শোনা যায়নি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে আভাস পাওয়া গিয়েছে, সাকিব ঝুঁকি নিয়ে হলেও শেষ টেস্টটা দেশের মাটিতে খেলতে চান এবং সেটা তাঁর বর্তমান অবস্থান বজায় রেখেই।
ওদিকে, বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের দল নির্বাচনের ব্যাপারে গাজী আশরাফ হোসেনের নির্বাচক কমিটির প্রতি সাকিবকে নিয়ে বিসিবির শীর্ষ পর্যায় থেকে এখন পর্যন্ত বিশেষ কোনো বার্তা নেই। নির্বাচক কমিটি তাই ক্রিকেটীয় বিবেচনায় সাকিবকে রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের দল গঠন করবে বলে জানা গেছে।
ঠিকানা/এসআর